ডিসেম্বর ২, ২০২৫

ওজন নিয়ন্ত্রণে ব্ল্যাক কফির উপকারিতা ও সতর্কতা

0
BLACK-COFFE_20251130_140520959

ব্ল্যাক কফি বহুদিন ধরেই মনোযোগ বাড়ানো, ক্লান্তি দূর করা এবং হালকা রিল্যাক্সেশনের জন্য জনপ্রিয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এটি ওজন কমানোর আলোচনাতেও জায়গা করে নিয়েছে। কারণ এতে ক্যালরি কম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি এবং এটি মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু ব্ল্যাক কফি কি সত্যিই ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে? এর সঠিক সময়, পরিমাণ এবং ঝুঁকি কী? বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ভিত্তিতে জানুন ব্ল্যাক কফি ওজন কমানোর বাস্তব উপকারিতা ও সতর্কতা।

ব্ল্যাক কফি কি সত্যিই ওজন কমাতে সাহায্য করে: বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্ল্যাক কফিতে থাকা ক্যাফেইন শরীরে থার্মোজেনেসিস বাড়ায়, যার ফলে শরীর বেশি ক্যালরি পোড়ায়। পাশাপাশি এতে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ফ্যাট শোষণ কমাতে এবং রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।

ব্ল্যাক কফি যে কয়েকভাবে ওজন কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে—

থার্মোজেনেসিস: শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে ক্যালরি পোড়ানোর হার বাড়ায়।
ফ্যাট অক্সিডেশন: শরীর দ্রুত ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে।
লিপোলাইসিস: জমে থাকা চর্বি শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
অ্যাপেটাইট সাপ্রেশন: কিছু সময়ের জন্য ক্ষুধা কমিয়ে দেয়, ফলে বাড়তি স্ন্যাকিং কম হয়।

তবে এসব সুবিধা থাকলেও ব্ল্যাক কফি কোনওভাবেই খেলেই ওজন কমে যাবে বিষয়টা এমন নয়। বরং ব্ল্যাক কফির পাশাপাশি ডায়েট ও লাইফস্টাইলই মূল ভূমিকা রাখে।

কখন ব্ল্যাক কফি খাওয়া সবচেয়ে ভালো: বিশেষজ্ঞরা ব্ল্যাক কফি খাওয়ার সঠিক সময় জানিয়েছেন।

এগুলো হলো:

ব্যায়ামের আগে: চর্বি পোড়ানোর জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো ব্যায়ামের ৩০–৪৫ মিনিট আগে। এতে শক্তি বাড়ে, অ্যালার্টনেস বাড়ে এবং ফ্যাট ব্রেকডাউন আরও সক্রিয় হয়।

সাধারণ দিনে: ব্যায়াম না করলে সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে খাওয়া ভালো। এ সময় শরীরের স্বাভাবিক কর্টিসল লেভেল ব্যালান্সে আসে, ফলে কফির প্রভাব ভালো লাগে।

যা এড়িয়ে চলবেন:

বিকেল ৪টার পর কফি খেলে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে।
অতিরিক্ত খালি পেটে কফি খেলে অ্যাসিডিটি বা অস্বস্তি বাড়তে পারে।

কতটা ব্ল্যাক কফি নিরাপদ: বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক ১–২ কাপ (২০০–৩০০ মিগ্রা ক্যাফেইন) বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিরাপদ।

  অতিরিক্ত কফি
.কর্টিসল বাড়ায়
.অ্যাসিডিটি বা পেটের জ্বালাপোড়া তৈরি করে
.ঘুম নষ্ট করে
.উদ্বেগ বা অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারে

কারা ব্ল্যাক কফি এড়িয়ে চলবেন: ব্ল্যাক কফি উপকারী হলেও সেটা সবার উপযোগী নয়। চিকিৎসকরা যাদের ব্ল্যাক কফি

এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন:
.গর্ভবতী নারী
.হৃদরোগের সমস্যায় ভুগলে
.ঘুমের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তি
.ডাইজেস্টিভ সমস্যায় ভুগছেন যারা
.ক্যাফেইন সেনসিটিভিটি আছে
.যারা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ খাচ্ছেন
.রক্তে শর্করা ওঠানামা করে এমন ব্যক্তি
.অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তি।

ব্ল্যাক কফি একটি কম ক্যালরির, মেটাবলিজম বাড়ানো পানীয় যা ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। তবে এটি কোনো জাদুর সমাধান নয়। সঠিক সময়ে, সীমিত পরিমাণে, এবং শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে ব্ল্যাক কফি খেলে তা উপকার করতে পারে। আর যাদের নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়াই ভালো।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *