আগস্ট ২৫, ২০২৫

যেসব ভুলে আপনার লিভারের ক্ষতি করছেন

download (1)

প্রতিদিনের জীবনধারার ওপর আমাদের সুস্থতা নির্ভর করে অনেকাংশেই। আমরা প্রতিদিন যা খাই, যেভাবে ঘুমাই বা যে অভ্যাসগুলো মেনে চলি- সেগুলোর প্রভাব সরাসরি পড়ে আমাদের শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোর ওপর। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটিই হলো লিভার। আমরা নিজের অজান্তেই কিছু ভুল অভ্যাস গড়ে তুলি। জীবনযাপনের কিছু ভুলে লিভারের রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

চলুন জেনে নিই এমন কিছু অভ্যাস-

অতিরিক্ত মদ্যপান
অনেকেই ভাবেন একটু-আধটু খেলে কিছু হবে না। কিন্তু নিয়মিত বেশি অ্যালকোহল খাওয়া লিভারের সবচেয়ে বড় শত্রু। এতে লিভারে ফ্যাটি লিভার, প্রদাহসহ নানা জটিল সমস্যা দেখা দেয়।

বেশি বেশি ওষুধ খাওয়া
ব্যথা হলেই পেইন কিলার, সামান্য অসুস্থতা মানেই নানা রকম ওষুধ- এসব করলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। বেশি ওষুধ খাওয়া লিভার ফেলিওর পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।

ধূমপান করা সিগারেটের ক্ষতি শুধু ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ নয়। এতে থাকা রাসায়নিক পদার্থ লিভারেরও ক্ষতি করে। ধূমপান লিভারের কোষ নষ্ট করে দিতে পারে, এমনকি ফাইব্রোসিসও তৈরি হতে পারে।

অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া প্রসেসড ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলা, কৃত্রিম মিষ্টি- এগুলো খেতে ভালো লাগলেও লিভারের জন্য একেবারেই খারাপ। বরং বেশি করে ফল ও শাকসবজি খান। এতে থাকা ভিটামিন, মিনারেল লিভার সুস্থ রাখে।

ঠিকমতো ঘুম না হওয়া প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম (৭-৮ ঘণ্টা) না হলে শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি হয়, যা লিভারের ক্ষতি করে। নিয়ম করে ঘুমানো, রাত জেগে না থাকা খুব জরুরি।

সকালে খালি পেটে থাকা অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকক্ষণ কিছু না খেয়ে থাকেন। এটা ভালো অভ্যাস নয়। এতে লিভারের কাজের ভার বাড়ে ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর কার্যক্ষমতা কমে যায়।

টিকা না নেওয়া টিকার মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রতিরোধের সুযোগ আছে। এই টিকা না নেওয়া এক বিরাট ভুল। আরও মনে রাখা প্রয়োজন, টিকা গ্রহণ সম্পন্ন হলেই যে সবার শরীরে সুরক্ষা অ্যান্টিবডি পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়। তাই টিকা নেওয়া শেষে সময়মতো অ্যান্টিবডির মাত্রাও পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছাতে অনেকের ক্ষেত্রে বাড়তি ডোজের প্রয়োজন হতে পারে।

ভিটামিন বা সাপ্লিমেন্ট বেশি খাওয়া ভেবে বসবেন না যে বেশি ভিটামিন মানেই বেশি উপকার। অতিরিক্ত নিউট্রিশন সাপ্লিমেন্ট, বিশেষ করে ভিটামিন এ বেশি খেলে লিভারে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

রাত জাগা আর দেরি করে ওঠা রাতে দেরিতে ঘুমানো এবং সকালে দেরিতে ওঠা- এই অভ্যাস বদলানো দরকার। এটা শুধু হজমের ক্ষতি করে না, লিভারেও প্রভাব ফেলে। সময়মতো ঘুম-জাগা শরীর ও লিভার দুয়ের জন্যই ভালো।

সকালে মল-মূত্র চেপে রাখা অনেকেই সকালে বিছানায় গড়াগড়ি করেন, এমনকি চাপলেও টয়লেটে যান না। কিন্তু প্রতিদিন যদি এইভাবে শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে আটকানো হয়, তাহলে লিভার ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে।

শারীরিক শ্রম জরুরি শারীরিক পরিশ্রম বাদ দিয়ে কেবল অফিসে বা ঘরে বসে কাজ করা লিভারের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাস। কারণ, শরীরচর্চার মাধ্যমে রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন আপনি। এই অভ্যাস গড়ে তুলুন কম বয়স থেকেই। কায়িক শ্রম হয়, এমন খেলাধুলা কিংবা দৌড়ঝাঁপ, হাঁটাহাঁটি, ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম—করতে পারেন সবই।

সংবাদটি শেয়ার করুন